ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে বিস্তারিত জেনে নিন
ঠোঁট ফাটা একটি সাধারন কিন্তু বিরক্তকর সমস্যা যা অনেক মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঘটে। এটি শুষ্ক আবহাওয়া পানি শূন্যতা এলার্জি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, ভিটামিনের অভাবে হতে পারে আমাদের শরীরে সঠিক পুষ্টিকর পুষ্টির অভাব হলে ঠোঁট শুকিয়ে ফেটে যেতে পারে।
নানা কারণে ঠোঁটের ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে। আসুন জেনে নেই কিভাবে শীতের
পাশাপাশি ভিটামিনের অভাবে ঠোঁটের সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ঘরোয়া উপায়
কিভাবে এটিকে ঠেকানো যায়।
পেজ সূচিপত্রঃ ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
- ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
- ঠোঁট ফাটার কারণ
- গরমে ঠোঁটের চামড়া ওঠার কারণ
- গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ
- ঠোঁট ফাটা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- ঠোঁটফাটা দূর করার উপায়
- ঠোঁট ফাটার প্রতিরোধে করনীয়
- পাঠকের শেষ কথা
ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
শীতকালে ঠোঁট ফাটার সমস্যা অনেকেরই হয়। তবে শুধু শীত নয় সারা বছর ঠোঁট শুকিয়ে
থাকলে এটি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে কিছু
নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাব ঠোঁট ফাটার অন্যতম কারণ। ঠোটের ত্বক খুবই
নরম। এবং খুব অল্প সময়ে শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে। শরীরের কিছু বিশেষ
ভিটামিনের অভাবেও ঠোট ফাটার জন্য দায়ী। ঠোঁট ফাটার কারণ হিসেবে যে ভিটামিন গুলোর
দায়ী নিম্নে তা আলোচনা করা হলো-
১. ভিটামিন বি২ (রিবোফ্লাভিন) এর অভাব
রিবোফ্লাভিনের ঘাটতি হলে ঠোঁট ফাটতে পারে এবং কোণে ফেটে যেতে পারে।
অতিরিক্ত শুষ্কতা ও জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হতে পারে।
২. ভিটামিন বি৩ (নিয়াসিন) এর অভাব
এই ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট রুক্ষ হয়ে যেতে পারে এবং ফাটার প্রবণতা বাড়ে।
চামড়া লালচে হয়ে যেতে পারে।
৩. ভিটামিন বি৬ (পাইরিডোক্সিন) এর অভাব
ঠোঁট ফাটার পাশাপাশি মুখের চারপাশে খসখসে ভাব দেখা যায়।
জিহ্বা লাল হয়ে যেতে পারে।
৪. ভিটামিন বি১২ এর অভাব
ঠোঁট ফাটার পাশাপাশি মুখের ভেতরে ঘা হতে পারে।
জ্বালাপোড়ার অনুভূতি এবং অতিরিক্ত শুষ্কতা দেখা যায়।
৫. ভিটামিন এ এর অভাব
ঠোঁট রুক্ষ হয়ে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যেতে পারে।
অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণে ফাটা ঠোঁটের সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
ঠোঁট ফাটার কারণ
যে কোন ভিটামিনের অভাবে অথবা শীতকালে বা শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ঠোঁট ফেটে যেতে।
ঠোঁট ফাটা শুধু অস্বস্তিকর নয় এটি ব্যথা ও সংক্রমণের কারণ হতে পারে। ঠোঁট ফাটার
অন্ত নিহত কারণগুলি বোঝা সঠিক সমাধান খুঁজে বের করা জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নিই ঠোঁট কাটার কারণ -
- শীতকালে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কমে যায় ফলে ঠোঁট সহজে শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়।
- শরীরে পানির অভাব হলে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায় এবং ঠোঁট ফাটার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- অনেকে ঠোঁট শুকিয়ে গেলে বারবার জিভ দিয়ে ভিজে নেন যা উল্টো ঠোঁটকে আরো শুষ্ক করে তোলে।
- ভিটামিন বি২, বি৩, আইরন বা ফ্যাটি এসিডের অভাব ঠোঁট ফাটার কারণ হতে পারে।
- লিপস্টিকে থাকা রাসায়নিক উপাদান থেকে এলার্জি হতে পারে যা ঠোঁট ফাটার কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত সূর্যের তাপে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে।
- অনেকে নাক বন্ধ থাকার কারণে মুখ দিয়ে শ্বাস নেই যা ঠোঁটকে শুষ্ক করে তুলে।
গরমে ঠোঁটের চামড়া ওঠার কারণ
ঠোঁট ফাটে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবেও আবার গরমের সময় অনেকেরই ঠোঁট শুষ্ক এটি
অস্বস্তিকর অনুভূতির পাশাপাশি ঠোঁট ফাটার কারণ হতে পারে। গরমকালে
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ক্ষতি হয় ঠোঁটের। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির
কারণে ঠোঁটের ত্বক অত্যন্ত শুকনো হয়ে যায় ফলে ঠোঁটের চামড়া উঠতে শুরু করে।
চলুন জেনে নিই গরমের ঠোটের চামড়া ওঠার কারণ-
- গরমের সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায় ফলে ঠোঁটের চামড়া উঠতে শুরু করে।
- সরাসরি সূর্যের তাপের ঠোঁটের আদ্রতা কমে যায় এবং চামড়া শুষ্ক হয়ে খসখসে হয়ে যায়। ফলে চামড়া উঠতে শুরু করে।
- অনেকে ঠোঁট শুকিয়ে গেলে বারবার জিভ দিয়ে ভিজিয়ে নেন। যা আরো শুষ্কতা বাড়িয়ে দেয় এবং ঠোঁট ফেটে যায়।
- গরমে শুষ্ক বাতাস ঠোঁটের আদ্রতা শুষে নেয় যা চামড়া ওঠার কারণ হতে পারে।
গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ
- গরমের তীব্রতায় শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। পর্যাপ্ত পানি না পান করলে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে।
- সূর্যের অতিবেগুনি (UV) রশ্মি ঠোঁটের সংবেদনশীল ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয়, ফলে ঠোঁট ফেটে যায়।
- গরমে বেশি ঘাম হওয়ার কারণে শরীর থেকে লবণ ও খনিজ বের হয়ে যায়, যা ঠোঁট ফাটার অন্যতম কারণ।
- অনেকেই ঠোঁট শুকিয়ে গেলে জিভ দিয়ে ভিজানোর চেষ্টা করেন, যা আসলে আরও শুষ্কতা সৃষ্টি করে এবং ফাটার কারণ হয়।
- বিশেষ করে ভিটামিন বি২, বি৩ ও আয়রনের অভাব থাকলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা হতে পারে।
- গরমের সময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকে, যা ঠোঁটের আর্দ্রতা শুষে নিয়ে ফাটতে বাধ্য করে।
- অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় বা ধূমপান ঠোঁট শুষ্ক করে তোলে, যা ফাটার কারণ হতে পারে।
ঠোঁট ফাটা কমানোর ঘরোয়া উপায়
ঠোঁটফাটা দূর করার উপায়
ঠোঁট ফাটার প্রতিরোধে করণীয়
- প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন যাতে শরীরে পানি শূন্যতা না থাকে।
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ভিটামিন এ এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- ঠোঁটের আদ্রতা ধরে রাখতে লিভ বা নারিকেল তেল বাদাম তেল বা মধু ব্যবহার করুন।
- অতিরিক্ত ধূমপান গ্রহণ ঠোঁটকে রুক্ষ করে তোলে তাই এগুলা পরিহার করুন।
- যেসব লিপস্টিক রাসায়নিক উপাদান বেশি থাকে তা পরিহার করুন।
- অনেকের ঠোঁট শুষ্ক হলে চেটে ফেলেন যা আরো বেশি ক্ষতিকর তাই এটি এড়িয়ে চলুন।
পাঠকের শেষ কথা
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি, ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে তা বিস্তারিত আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এরকম ধরনের আর্টিকেল পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url