বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায়

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে আমরা কম বেশি সবাই জানতে ইচ্ছুক।  কিন্তু কিভাবে বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করব এই বিষয় সম্পর্কে আমরা সঠিক কোন দিকনির্দেশনা পাই না। তাই আপনাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি করা।

বাচ্চাদের-ত্বক
পোস্টটি যদি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে সকল বিষয় বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেয়া যাক বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায়

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা। কিন্তু আমাদের সবারই জানা উচিত বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে। বাচ্চাদের ত্বক প্রাকৃতিকভাবে নরম, কোমল এবং সংবেদনশীল হয়ে থাকে। এই ত্বককে ফর্সা বা উজ্জ্বল রাখার জন্য কেমিক্যালজাত কোনো প্রসাধনী ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করাই সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। বাচ্চার ত্বকে ধুলাবালি জমে থাকলে তা ধীরে ধীরে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে দিতে পারে। 

বাচ্চার ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখতে ঘরোয়া কিছু প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন কাঁচা দুধ, বেসন, হলুদ এবং মধু দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে তা সপ্তাহে দুই দিন ত্বকে হালকা করে লাগাতে পারেন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং ত্বক করে তুলে উজ্জ্বল ও মসৃণ। প্রতিদিন হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে এবং পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুছে দিতে হবে। গোসলের সময় বাচ্চাদের জন্য তৈরি বেবি সাবান ব্যবহার করাই ভালো। 

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার ডাক্তারি ক্রিম

বাচ্চাদের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং কোমল হয়। অনেক সময় অভিভাবকরা চান তাদের সন্তান আরো ফর্সা বা উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী হোক। এক্ষেত্রে অনেকে ডাক্তারি ক্রিম বা কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করে ফেলেন, যা শিশুর ত্বকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির প্রভাব ফেলতে পারে তাই বাচ্চাদের ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপায়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে করে তাদের ত্বক স্বাস্থ্যকর ও প্রাণবন্ত থাকে।

অনেক অভিভাবক চান তাঁদের সন্তানের ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা হোক। এই কারণে অনেকেই বাজারে পাওয়া বিভিন্ন রকম ডাক্তারি ক্রিম বা মেডিকেটেড ফেয়ারনেস ক্রিমের দিকে ঝুঁকেন। তবে শিশুদের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় যেকোনো পণ্য ব্যবহারের আগে সচেতনতা ও সঠিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরি। বাজারে কিছু ডাক্তারি ক্রিম আছে যা শিশুদের ত্বকে ব্যবহারের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে নির্দিষ্টভাবে তৈরি করা হয়েছে।

এই ক্রিমগুলোর বেশিরভাগই স্টেরয়েড, ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন বা স্কিন টোন ইভেন আউট করার উপাদানযুক্ত। যেমন কিছু নামকরা ক্রিম রয়েছে Elocon, Cutisoft, Melalite ইত্যাদি। তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, এদের অধিকাংশই মূলত ত্বকের দাগ, পিগমেন্টেশন, এলার্জি বা ইনফ্ল্যামেশন কমাতে ব্যবহৃত হয়, ফর্সা করার জন্য সরাসরি তৈরি নয়।

তবে কিছু কোম্পানি শিশুদের জন্য স্পেশাল স্কিন ক্রিম তৈরি করে যেখানে কম ডোজের স্টেরয়েড বা নন-স্টেরয়েড উপাদান থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু হোমিওপ্যাথিক বা আয়ুর্বেদিক ব্র্যান্ড যেমন Himalaya baby cream, Sebamed baby cream কিংবা Aveeno baby Soothing cream এগুলোর মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন জিঙ্ক অক্সাইড, মিল্ড ভিটামিন, বা ক্যামোমাইল এক্সট্র্যাক্ট, যা ত্বককে ফর্সা না করলেও উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।

বাচ্চাদের-ত্বক

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় 

প্রতিটি মা-বাবার স্বপ্ন থাকে তাঁদের সন্তান যেন সুস্থ, সুন্দর ও প্রাণবন্ত থাকে। শিশুর ত্বক স্বাভাবিকভাবেই কোমল ও নাজুক হয়। তবে ধুলো, রোদ, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কারণে অনেক সময় শিশুর ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা কমে যেতে পারে। এই সময় প্রয়োজন পড়ে কিছু প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া যত্নের। আজকের এই লেখায় আমরা জানবো কীভাবে কোনো ক্ষতিকর কেমিক্যাল ছাড়া ঘরোয়া উপায়ে শিশুর ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়।

  • কাঁচা দুধে রয়েছে প্রাকৃতিক ক্লিনজার, যা শিশুর ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন স্নানের আগে কাঁচা দুধ দিয়ে শিশুর শরীরে হালকা ম্যাসাজ করলে ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হয়।
  • এক চামচ বেসন, এক চিমটি হলুদ ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এটি শিশুর মুখে ও হাতে হালকা করে লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বক পরিষ্কার করে ও ফর্সা ভাব বাড়ায়।
  • নারকেল তেল শিশুদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর সঙ্গে কিছুটা জাফরান মিশিয়ে রাখলে তা রাত্রে ঘুমানোর আগে লাগালে ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আসে।
  • টমেটোতে আছে লাইকোপিন, যা ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে। ১ চা চামচ টমেটোর রস একটি তুলোতে ভিজিয়ে শিশুর ত্বকে আলতো করে মাখান এবং কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। তবে শিশুর বয়স ১ বছরের উপরে হলে এটি ব্যবহার করতে হবে।
  • শসা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ঠাণ্ডা রাখে। শসার রস তুলো দিয়ে শিশুর মুখে লাগিয়ে দিন এবং ৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • মধু ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে আর লেবুর রসে আছে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান। ১ চা চামচ মধুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে হালকা করে ত্বকে মেখে দিন। খুব বেশি সময় রাখবেন না, ২-৩ মিনিট পরেই ধুয়ে ফেলুন।
  • শিশুর ত্বকে ধুলাবালি জমলে তা কালচে ও নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার মুখ ধোয়া, পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করা। এই ছোট ছোট অভ্যাস শিশুর ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
  • শিশুর শরীরের ভেতরের পানি ঘাটতি হলে ত্বকে তার প্রভাব পড়ে। তাই যতটা সম্ভব পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। এতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে ও প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বজায় থাকবে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা শুধু বাইরের যত্নে নয়, বরং ভিতরের পুষ্টিও গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে পর্যাপ্ত ফল, শাকসবজি, দুধ, ডিম ও বাদাম খাওয়ানোর মাধ্যমে ত্বকে স্বাভাবিক ফর্সাভাব বজায় রাখা যায়।
  • বাচ্চাদের ত্বক সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে দ্রুত কালচে হয়ে যেতে পারে। তাই সরাসরি রোদে বাইরে বের হলে ছাতা ব্যবহার করুন বা হালকা সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন।

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার ফেসপ্যাক

বাচ্চাদের ত্বক খুবই কোমল ও সংবেদনশীল হয়ে থাকে, তাই তাদের ত্বকে কোনো কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে বানানো কিছু সহজ ফেসপ্যাক নিয়মিত ব্যবহারে বাচ্চাদের ত্বক আরও উজ্জ্বল ও মসৃণ হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করাই মূল উদ্দেশ্য নয়, ত্বককে স্বাস্থ্যবান ও পরিষ্কার রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। 

একটি সহজ ও প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক তৈরি করতে চাইলে আপনি দুধ, কাঁচা হলুদ ও বেসনের সংমিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। এক চামচ কাঁচা দুধের সঙ্গে আধা চামচ বেসন ও এক চিমটি কাঁচা হলুদ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি বাচ্চার মুখে হালকা করে লাগিয়ে ৫–৭ মিনিট পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও একটি ফেসপ্যাক বানাতে পারেন দই ও মধু দিয়ে। এক চামচ টক দইয়ের সঙ্গে আধা চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিট রেখে ধুয়ে দিন। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে।তবে এসব ব্যবহার করার আগে বাচ্চার ত্বকে অ্যালার্জি হয় কি না, তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া ভালো। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের যত্ন নিলে বাচ্চারা থাকবে নিরাপদ এবং তাদের ত্বক থাকবে সুন্দর ও সুস্থ।

বাচ্চাদের-ত্বক

গর্ভের বাচ্চা ফর্সা হওয়ার উপায়

বাচ্চার ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে জানার সাথে এটাও জানতে হবে যে গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ত্বক ফর্সা হয়। গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে ফলমূল খেতে হবে। সব ধরনের ফলমূল খেতে হবে বিভিন্ন কালারের। প্রতিদিন নিয়ম করে দুই ধরনের ফল খেতে হবে গর্ভ অবস্থায়। দুধ বা দুধের তৈরি খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় রাখবেন। দুধের সাথে জাফরান মিক্স করে আপনি খেতে পারেন।

গর্ভে থাকা অবস্থায় শিশুর গায়ের রং কি হবে, তা মূলত নির্ভর করে জেনেটিক বা বংশগতির ওপর। মা বাবার গায়ের রং পূর্বপুরুষদের জিন এই সব কিছু মিলে শিশুর ত্বকের রং নির্ধারিত হয়। তাই গর্ভ অবস্থায় কোনো খাবার বা ওষুধ খেয়ে শিশুর গায়ের রং ফর্সা করা সম্ভব নয়। তবে মা যদি গর্ব অবস্থায় স্বাস্থ্যকর খাবার খান শরীর ও ত্বকের যত্ন নেন, তাহলে শিশুও সুস্থ ও সুন্দর গঠনে জন্মাতে পারে।

ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে গর্ভাবস্থায় মায়েরা যে খাবার খেলে বাচ্চার ত্বক ফর্সা হবে। কিছু প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার আছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য উপকারী নিম্নে তা দেয়া হলো -

  • নারকেল পানি গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুব উপকারী। শরীর ঠান্ডা রাখে এবং ত্বক সুন্দর একটা সাহায্য করে
  •  বিভিন্ন ধরনের ফলমূল যেমন পেঁপে, গাজর,কমলা, বিট, আঙ্গুর, আপেল ইত্যাদি ভিটামিন সি ও এ তে ভরপুর যা শিশুর বিকাশে ত্বকের বিকাশে সহায়তা করে।  
  • বাদাম ও দুধে থাকা প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম শিশুর গঠনের জন্য ভালো, এবং এটি ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জলতা বাড়াতে পারে। 

পাঠকের শেষ কথা

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করা বা উজ্জ্বল রাখা নিয়ে চিন্তা করার আগে আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রতিটি শিশুই সতন্ত্র এবং তাদের প্রাকৃতিক রঙে সবচাইতে সুন্দর। তবে পরিচ্ছন্নতা পুষ্টিকর খাবার এবং নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে শিশুর ত্বক আরো স্বাস্থ্য উজ্জ্বল রাখা সম্ভব। বাজারে কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে যত্ন নেয়া সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর।

বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশাকরি বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এ ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোষ্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url